কি কারণে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ রাক্ষসকুলে জন্ম নিয়েছিল

কি কারণে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ রাক্ষসকুলে জন্ম নিয়েছিল
কি কারণে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ রাক্ষসকুলে জন্ম নিয়েছিল


রাবণ, কুম্ভকরণ, হিরণ্যাক্ষ, হিরণ্যকশিপু, দন্তবক্র, শিশুপাল সম্পর্কে আপনারা অবশ্যই অবগত। আমরা এও জানি ভগবান বিষ্ণুই তার বিভিন্ন অবতারে এদের বধ করেন। কিন্তু কি কারণে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ রাক্ষসকুলে জন্ম নিয়েছিল বা দুই ভাই হিরণ্যাক্ষ ও হিরণ্যকশিপু এবং দন্তবক্র ও শিশুপালই বা কেন রাক্ষস জন্ম নিয়েছিল এবং বিষ্ণু তাদের কেনই বা বধ করেন তা ভাগবত পূরণে বর্ণিত আছে। 

ব্রহ্মার চারজন মানসপুত্র ছিলেন যারা মহান সাধু ছিলেন এবং সেই সাধুরা সংকাদিক নামে পরিচিত ছিলেন। তারা চার ভাই ছিলেন এবং তাদের নাম ছিল  সনক, সনন্দন, সনাতন, সনতকুমার।তাদের সনকদিক সাধু নামে ডাকা হত। তারা অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং মহান ঋষি ছিলেন।  

তারা চারজন একসাথে একদিন বৈকুন্ঠ ধামে ভগবান বিষ্ণুর সাথে দেখা করতে যান। সেখানে কর্তব্যরত দ্বাররক্ষক জয় ও বিজয় সনাকাদিক সাধুদের ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। ব্রহ্মার মানসপুত্রগণ তাদের সেই ব্যবহারে তাদের উপর রেগে যান। তারা দ্বাররক্ষীদের তৎক্ষণাৎ রাক্ষস হয়ে যাওয়ার জন্য অভিশাপ দিয়ে দেন। জয় ও বিজয় নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তাদের আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে শুরু করে।

ভগবান বিষ্ণুও যখন সেই ঘটনা জানতে পারেন তখন তিনিও তাদের ভুলের জন্য তাদের ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য সাধুদের বলেছিলেন। চার ভাই তখন বলেন দিয়ে দেওয়া অভিশাপ ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। কিন্তু এক উপায়ে তারা মুক্তি পেতে পারেন তা হল এই দু'জন দারোয়ানকে পরের তিনটি জীবনে রাক্ষস হিসাবে জন্মগ্রহণ করতে হবে। তিনজন্মের পরে তারা ভগবান বিষ্ণুর দ্বাররক্ষী হিসাবে পুনরায় নিজের শুরু করতে পারেন। 

কিন্তু তিনজন্মেই তাদের ভগবান বিষ্ণু বা ওনার অবতারের হাতেই মরতে হবে তবেই তাদের মুক্তি সম্ভব। সেই অভিশাপের কারণে জয় ও বিজয় সত্যযুগে হিরণ্যকশিপু এবং হিরণ্যাক্ষ হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিল। তারা পরবর্তীকালে ত্রেতা যুগে রাবণ ও কুম্ভকরণ হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এবং তারাই দ্বাপর যুগে শিসুপাল ও দন্তবক্র রাক্ষস হয়ে জন্ম নিয়েছিল।

সত্যযুগে হিরণ্যকশিপুর বিষ্ণুর অবতার নরসিংহ দেবের হাতে বধ হয় এবং হিরণ্যাক্ষ এর বরাহ অবতারের হাতে। আমরা সবাই জানি ত্রেতা যুগে রাবন ও কুম্ভকর্ণ কিভাবে ভগবান রামের হাতে মৃত্যুদণ্ড পেয়ে মুক্তি পেয়েছিল। এবং শিসুপাল ও দন্তবক্র দ্বাপর যুগে শ্রীকৃষ্ণের হাতে মুক্তি পেয়েছিলো।